সরকারবিরোধী আন্দোলনে সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। ২৪ ডিসেম্বর গণমিছিলের মধ্য দিয়ে শুরু হবে তাদের এ পথচলা। বিএনপির ঘোষিত ১০ দফা ও কর্মসূচির প্রতি ইতোমধ্যে একাত্মতা জানিয়েছে ৩০টির অধিক দল। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ বামপন্থি কয়েকটি দলকেও এ প্রক্রিয়ার আনার চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে। যুগপৎভাবে রাজপথের আন্দোলনে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে দলগুলো। প্রথম কর্মসূচিতেই সবার নজর কাড়তে চায় তারা। নতুন কর্মসূচি প্রণয়নসহ সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য শিগগিরই গঠন করা হবে লিয়াজোঁ কমিটি। আপাতত মঞ্চ আলাদা হলেও সবার লক্ষ্য অভিন্ন।

এদিকে যুগপৎ আন্দোলনে রাজপথে নামছে জামায়াতে ইসলামীও। ২৪ ডিসেম্বর দেশব্যাপী গণমিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি। ওইদিন রাজপথে নামার ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। দীর্ঘদিন পর জামায়াত রাজপথে নামার ঘোষণায় রাজনৈতিক মহলে চলছে নানা আলোচনা। সরকার প্রকাশ্যে জামায়াতকে কর্মসূচি পালনের সুযোগ দেবে নাকি প্রতিহত করবে তা নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন।

প্রথম কর্মসূচি কোন দল কোথায় পালন করবে তা নিয়ে আলোচনা চলছে। সবার সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত করা হতে পারে স্থান। তবে ২০ দলীয় জোটের একটি সূত্র জানায়, বিএনপি ও জামায়াত আলাদাভাবে এ কর্মসূচি পালন করবে। জোটের বাকি দলগুলো একসঙ্গে এক স্থানে পালন করতে পারে এ কর্মসূচি। বিষয়টি চূড়ান্ত না হলেও এমন আলোচনা চলছে।

তিনি বলেন, প্রতিটি দল আলাদাভাবে তাদের কর্মসূচি পালন করবে। সবার লক্ষ্য একটাই সরকারের পতন। শুধু রাজনৈতিক দল নয়, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষও এ কর্মসূচিতে অংশ নেবে। গণতান্ত্রিক এ কর্মসূচি পালনে আমাদের প্রস্তুতি চলছে।

বিএনপির ১০ দফা ও কর্মসূচির প্রতি সমমনা ও সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলের বেশিরভাগ সমর্থন জানায়। তবে গণতন্ত্র মঞ্চ বিএনপির ১০ দফা সামঞ্জস্য রেখে আরও ৪ দফা যোগ করে ১৪ দফা দিয়েছে। জামায়াতে ইসলামী ১০ দফা দিলেও সেখানে কিছু দফা তাদের মতো করে যোগ করে। বাকি দলগুলো আলাদা করে কোনো দফা দেয়নি। সব দলের সঙ্গে আলোচনা করে ১০ দফার ভিত্তিতে যুগপৎ আন্দোলনের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু কয়েকটি দল সেই দফার কিছু পরিবর্তন ও সংযোজন আনায় এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তবে গণতন্ত্র মঞ্চ ও জামায়াতের নেতারা জানান, তারা নিজেদের মতো করে কিছু দফা সংযোজন করেছেন। কিন্তু মূল দফা একই, সরকার পতন। এছাড়া দফা যাই থাকুক কর্মসূচি হবে অভিন্ন।

সবার নজর থাকবে জামায়াতের ওপর : জামায়াতে ইসলামীর রাজপথে নামাকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন অনেকেই। দীর্ঘদিন পর কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে রাজপথে নামায় অনেকেই সংঘাতের আশঙ্কা করছেন। সরকার প্রকাশ্যে জামায়াতকে রাজনৈতিক কার্যক্রম করার সুযোগ দেবে কিনা-তা নিয়েও আলোচনা রয়েছে। বিএনপি ও সমমনা দলের একাধিক নেতা বলেন, যুগপৎ আন্দোলন নিয়ে জামায়াতের সঙ্গে তাদের আনুষ্ঠানিক কোনো বৈঠক হয়নি। দলটি নিজেদের মতো করে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। তাদের সেই অধিকার রয়েছে। কিন্তু জামায়াতের অজুহাত দিয়ে সরকার ও ক্ষমতাসীনরা বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর কর্মসূচিতে বাধা দেয় কিনা সে বিষয়টিও ভাবতে হচ্ছে। তবে জামায়াত নেতারা বলছেন, অতীতেও বিভিন্ন দলের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করেছে। কীভাবে এ আন্দোলন করতে হয় তা তাদের ভালো জানা রয়েছে। আমাদের কর্মসূচি নিয়ে কাউকে ভাবতে হবে না।